বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার পরিবেশকে বিপন্ন করে তুলবে মব জাস্টিস নামে একটি সহিংস উন্মাদনা। তিনি সতর্ক করে বলেছেন যে এটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার পরিবেশকে বিপন্ন করবে।
নির্যাতনের শিকারদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে বুধবার এক বার্তায় তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যদিও আমরা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত, গণতন্ত্রের জন্য প্রতিষ্ঠান তৈরি এবং এর অনুশীলন নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। মব জাস্টিস নামে একটি সহিংস উন্মাদনা মানবতার শত্রুতে পরিণত হয়েছে। এটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশকে বিপন্ন করবে।
নির্যাতনের শিকারদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস আগামীকাল, ২৬ জুন পালিত হবে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দিবসটি উপলক্ষে তারেক রহমানের বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন।
বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে যে নির্যাতনের শিকারদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবস অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দখলকৃত দেশগুলি ধীরে ধীরে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, কিন্তু বিশ্বজুড়ে সহিংসতা ও সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। অনেক দেশে রক্তপাত ও বর্বরতা অব্যাহত ছিল, যার ফলে অসংখ্য মৃত্যু, আহত এবং পঙ্গুত্বের ঘটনা ঘটেছে।
তারেক রহমান বলেন, বিভিন্ন দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা তাদের বিরোধীদের উপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, সেখানে জীবন ও সম্পত্তি মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। স্বৈরশাসকদের প্রভাবে ভিন্নমতাবলম্বীরা জোরপূর্বক গুম, হত্যা এবং মিথ্যা অভিযোগে বছরের পর বছর ধরে কারাবাসের শিকার হচ্ছে।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের এক ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী শাসন প্রায় ১৬ বছর ধরে অব্যাহত ছিল, গণতন্ত্রকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
তিনি আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশকে একটি সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য অভিযুক্ত করেন, নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা সহ সকল নাগরিক অধিকার হরণ করে। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বিভিন্ন কঠোর আইন দ্বারা শৃঙ্খলিত ছিল এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, যাকে তিনি গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন, তাকে অন্যায়ভাবে একটি বানোয়াট মামলায় কারারুদ্ধ করা হয়েছিল এবং যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, পুরো দেশ ভয় ও নীরবতায় আচ্ছন্ন ছিল।
তারেক রহমান একতরফা ব্যবস্থার পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। এটি প্রতিরোধ করতে হলে গণতন্ত্রকে গতিশীল ও নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে। আমাদের মানবতা, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মহৎ ঐতিহ্য লালন করতে হবে। গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে অটল ঐক্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জাতিসংঘ কর্তৃক মনোনীত দিবসে বিশ্বব্যাপী নির্যাতনের শিকারদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বিএনপি নেতা বলেন, নির্যাতনের শিকারদের ন্যায়বিচারের পথে বাধা দূর করার আহ্বান জানাচ্ছি। মানবিক মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত গণতন্ত্রপন্থী জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিষ্ঠুর নির্যাতনকারী এবং কর্তৃত্ববাদী শাসকদের পরাজিত করা সম্ভব।
