ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজাদুজ্জামান মঙ্গলবার মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় মোট ২৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও বেশ কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন মিয়াকে মামলার দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শামসুল আজম আজ বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, থানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় কমপক্ষে ৪০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর আগে দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা আরেকটি মামলায় আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়, যার ফলে ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলা থেকে আলগী ও হামির্দী দুটি ইউনিয়ন সরিয়ে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দা-সালথায় যোগদান করা হয়। এর প্রতিবাদে ৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয়রা ঢাকা-খুলনা এবং ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে। ইউএনওর আশ্বাসের পর, তিন দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করা হয়। পরে, ৯-১১ সেপ্টেম্বর এবং ১৪-১৬ সেপ্টেম্বর সড়ক অবরোধ পালিত হয়। গত রবিবার, বিক্ষোভকারীরা ভাঙ্গার হামির্দী ও ভাঙ্গা জংশনে এবং রাজবাড়ীতে তিনটি ট্রেন বন্ধ করে রেললাইনও অবরোধ করে, যার ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
একই রবিবার, স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা আন্দোলন দমনের ঘোষণা দেন। একই দিনে, আলগী ও হামির্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএম সিদ্দিককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সোমবার, অবরোধের দ্বিতীয় দিনে, ভাঙ্গা থানা, উপজেলা কমপ্লেক্স, ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা এবং বেশ কয়েকটি সরকারি অফিসে সহিংস ঘটনা ঘটে, যেখানে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোর সাথে কথা বলতে গিয়ে একজন বিক্ষোভকারী বলেন, তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল এবং তারা ভাঙচুর চালাতে চান না। তবে, আলগি ও হামির্দির বাসিন্দা এবং ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের জড়িত করে দ্রুত বিচার আইনের মামলাটি স্থানীয়রা মেনে নিতে পারেনি। এর প্রতিবাদে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, ভাঙ্গা উপজেলা কমপ্লেক্সে সহিংস ঘটনার জন্য আরেকটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।