কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় এক নারীর উপর ধর্ষণ ও পরবর্তী নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে ৩৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক একটি যৌথ বিবৃতি জারি করেছেন।
তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন।
সোমবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা এবং তার এবং তার পরিবারের জন্য মানসিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেওয়া হয়েছে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার রাতে মুরাদনগরের একটি গ্রামে এক নারীকে তার বাড়ির ভেতরে ধর্ষণ করা হয়। শব্দ শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে।
এতে আরও বলা হয়েছে, তাকে নগ্ন অবস্থায় দেখে কয়েকজন ব্যক্তি তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং ঘটনাটি ভিডিও করে। ভিডিওটি পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, পরের দিন, শুক্রবার, ওই নারী মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ভিডিওটি অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ প্রধান অভিযুক্ত ফজর আলী এবং আরও চারজন – সুমন, রমজান আলী, আরিফ এবং অনিককে গ্রেপ্তার করেছে।
স্বাক্ষরকারীরা নারীর ধর্ষণ, নির্যাতনের চিত্রগ্রহণ এবং ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়ার নিন্দা জানিয়েছেন। তারা সরকার ও কর্তৃপক্ষকে ভুক্তভোগী এবং তার পরিবারের জন্য পূর্ণ সুরক্ষা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
৩৮ জন নাগরিক যথাযথ তদন্ত এবং জড়িত সকলের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যাদের মধ্যে নির্যাতনে অংশগ্রহণকারী এবং ভিডিওটি তৈরি বা বিতরণে সহায়তাকারীরাও রয়েছেন।
বিবৃতিতে ভুক্তভোগীর ছবি প্রকাশকারী গণমাধ্যমেরও সমালোচনা করা হয়েছে, বলা হয়েছে যে এই ধরনের কর্মকাণ্ড কেবল আইন লঙ্ঘন করে না বরং ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা ও মর্যাদাকেও ক্ষুণ্ন করে।
স্বাক্ষরকারীরা এই ধরনের সংবেদনশীল বিষয়গুলি নিয়ে প্রতিবেদন করার সময় গণমাধ্যমকে আরও দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
স্বাক্ষরকারীরা হলেন- সুলতানা কামাল, খুশি কবির, ইফতেখারুজ্জামান, সারা হোসেন, রাশেদা কে চৌধুরী, শিরিন হক, শাহীন আনাম, সুমাইয়া খায়ের, জেড আই খান পান্না, শহিদুল আলম, গীতি আরা নাসরীন, শামসুল হুদা, সুব্রত চৌধুরী, শাহনাজ কুমার হোসেন, রওজা খান, রওজা হোসেন, মো. ফাস্তিনা পেরেরা, রাহনুমা আহমেদ, ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, রেজাউর রহমান লেনিন প্রমুখ।