মামলা দায়ের এবং গ্রেফতারের ক্ষেত্রে নির্বিচারে একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি যে কোনও মামলায় গ্রেপ্তারের আগে তদন্ত করা উচিত। মামলা দায়েরের পরে যদি তদন্ত করতে হয়, তাহলে আমাদের মনে রাখতে হবে যে এত মামলা তদন্তের জন্য বিপুল সংখ্যক পুলিশের প্রয়োজন হবে। থানায় শত শত সাব-ইন্সপেক্টর প্রয়োজন হবে। আমাদের কি সেই ক্ষমতা আছে? তাহলে কতক্ষণ লাগবে? সরকারকে এই বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।
একটি মামলায় ৩০০-৪০০ জনকে অভিযুক্ত করা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। আমি মনে করি যারা ফৌজদারি আইন অনুশীলন করেন তাদের সাথে পরামর্শ করে বোঝা উচিত যে এই ধরনের পরিস্থিতিতে ফৌজদারি কার্যবিধি (CrPC) কী বলে। এই বিষয়ে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে। কারও বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পরে কি তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন? এ বিষয়ে যথেষ্ট স্পষ্টতা আছে বলে মনে হয় না।
বিষয় যাই হোক না কেন, নির্বিচারে মামলা দায়ের এবং গ্রেপ্তার কোনওভাবেই বৈধ নয়। যদি আইনে অস্পষ্টতা থাকে, তবে তা পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবে বলতে গেলে, একটি থানায় হাজার হাজার মামলা থাকে; যদি প্রতিটি মামলার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হয়, তাহলে বছরের পর বছর লেগে যাবে।
এর মধ্যে জড়িতদের কী হবে? যদি এভাবে শত শত লোককে অভিযুক্ত করা হয় এবং বলা হয় যে তদন্ত হবে, তাহলে কী ধরণের পরিস্থিতি তৈরি হবে? অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার সম্পর্কে আমি বিস্তারিত জানি না, তবে আমার উপরের মন্তব্যগুলি তার মামলার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আমি ব্যক্তিগতভাবে আইন পড়ি। মামলা দায়ের এবং গ্রেপ্তার বন্ধ করার সমাধান কী তা আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না, তবে সরকার অবশ্যই ফৌজদারি আইনে বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করতে পারে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন সদস্য যদি কোনও মামলায় অভিযুক্ত হন তবে কী হবে? আমরা কি এখনও বলব যে তাদের গ্রেপ্তার করা উচিত?
এগিয়ে যাওয়ার একটি উপায় থাকতে হবে। সরকারকে অবশ্যই সেই পথ খুঁজে বের করতে হবে। অন্যথায়, পরিস্থিতি যেভাবে চলছে, তার ফলে মানুষের উপর নির্যাতন হচ্ছে।
আমরা যদি কেউ আসলেই অপরাধ করে থাকে তবে আমরা সঠিক ন্যায়বিচার চাই। কিন্তু দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত সবাই নির্দোষ। এখন, যদি অপরাধ প্রমাণের প্রক্রিয়াটি অত্যধিক দীর্ঘ সময় নেয়, তবে এটি কোনও লাভ করে না।
যদি কেউ নির্দোষ হয়, এবং তা প্রমাণ করতে ৫-১০ বছর সময় লাগে, তাহলেও লাভ কী? এটি প্রতিটি মামলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এত আলোচনার পরেও, নির্বিচারে মামলা দায়েরের ধারাবাহিকতা নিশ্চিতভাবেই অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।