উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা-২০২৫ আজ, বৃহস্পতিবার সারা দেশে একযোগে শুরু হচ্ছে।
এ বছর, মোট ১২,৫১,১১১ জন পরীক্ষার্থী পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।
১১টি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৬,১৮,০১৫ জন পুরুষ এবং ৬,৩৩,০৯৬ জন মহিলা। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১০,৫৫,৩৯৮ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন।
এছাড়াও, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (আলিম) এর অধীনে ৮৬,১০২ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১০৯,৬১১ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন।
এ বছর, সারা দেশে মোট পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ২,৭৯৭।
দেশের বাইরে আটটি কেন্দ্রে মোট ২৯৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯,৩১৪।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে সকল ধরণের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
নির্দেশনা অমান্য করে কোচিং সেন্টার খোলা রাখলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মচারীদের মোবাইল ফোন সহ যেকোনো ধরণের ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরারের সভাপতিত্বে এই বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে রয়েছে প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়ানো এবং কপি সরবরাহের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।
পরীক্ষা চলাকালীন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি এইচএসসি পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত করার জন্য তাদের দায়িত্ব পালন করবে।
পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পরে কেউ যদি কেন্দ্রে প্রবেশ করে, তাহলে তাদের নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় এবং বিলম্বের কারণ রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে অবহিত করতে হবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্যান্য অনিবার্য কারণে যদি কোনও কেন্দ্রে পরীক্ষা দেরিতে শুরু হয়, তাহলে বিলম্বিত সময় গণনা করে পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত সময় দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় আশা করছে যে সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সমন্বয় এবং অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার এহসানুল কবির বলেছেন যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বাসসকে বলেন, ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে আয়োজনের জন্য আমরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সম্ভাব্য সকল পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারের বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা এই বিষয়ে একটি কঠোর নজরদারি ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যদি কোনও গুজব ছড়ানো হয়, তাহলে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বিবেচিত হবে। প্রশ্ন ফাঁসের গুজবকে আমরা গুরুত্ব দেই না এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তি ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অধ্যাপক কবির শিক্ষার্থীদের গুজব বা প্রশ্ন ফাঁসের পেছনে না ছুটে তাদের পাঠ্যপুস্তকের দিকে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে ভিড় না করার আহ্বান জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, পরীক্ষার সময় কেন্দ্রে উপস্থিত থাকার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অভিভাবকদেরও পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে ভিড় না করার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করার জন্য অনুরোধ করছি।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বাসসকে বলেন, প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
রাজশাহী বোর্ডে একটি প্রশ্ন সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এটি বাতিল করা হয়েছে।
আমাদের কাছে বিকল্প প্রশ্নপত্রের একটি সেট প্রস্তুত রয়েছে। পরীক্ষায় কোনও ব্যাঘাত ঘটবে না, তিনি আরও বলেন।
