শনিবার ভোরে ইরান ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং সামরিক অবকাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলিকে লক্ষ্য করে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি বিমান হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে, যার ফলে শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী ও জেনারেল নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত বলেছেন যে ইসরায়েলি হামলায় ৭৮ জন নিহত এবং ৩২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন সত্ত্বেও যে তেহরান সক্রিয়ভাবে বোমা তৈরির চেষ্টা করছে না, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা অর্জন থেকে বিরত রাখার জন্য একটি পূর্ব-প্রতিক্রিয়ামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইসরায়েল এই হামলাকে সমর্থন করেছে।
ওমানে তাদের পরিকল্পিত বৈঠকের মাত্র কয়েকদিন আগে, এই ঘটনাবলী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে আসন্ন পারমাণবিক আলোচনাকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং বলেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পারমাণবিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়া আর অর্থহীন। মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই বলেছেন যে ইসরায়েল সমস্ত লাল রেখা অতিক্রম করেছে যা তিনি একটি অপরাধমূলক কাজ বলে অভিহিত করেছেন। রবিবারের নির্ধারিত আলোচনা বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত না করলেও, তিনি উল্লেখ করেছেন যে ইরানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও অস্পষ্ট।
জর্ডান, যারা সংঘাতের কারণে সাময়িকভাবে তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছিল, শনিবার সকালে বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য আকাশসীমা পুনরায় চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। এই পদক্ষেপ থেকে বোঝা যায় যে আম্মান তাদের ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে ইরানি প্রজেক্টাইল এবং ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের তৎপরতা সত্ত্বেও, অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র কার্যকলাপের কোনও তাৎক্ষণিক ঝুঁকি দেখছে না।
ইসরায়েলে হতাহতের সংখ্যা
তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একজন মহিলার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে এবং মধ্য ইসরায়েলে আবাসিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আরও দুজন নিহত হয়েছেন। ওই হামলায় মোট ১৯ জন আহত হয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় আরও সাতজন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন মাঝারি।
জাতিসংঘ প্রধানের শান্তির আহ্বান
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইরান ও ইসরায়েল উভয়কেই তাদের সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে কূটনীতিতে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “যথেষ্ট উত্তেজনা। থামার সময় এসেছে। শান্তি ও কূটনীতি অবশ্যই জয়ী হতে হবে।
তেহরান বিমানবন্দরে আগুন
ইরানের মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে, স্থানীয় গণমাধ্যম ধোঁয়া ও আগুনের ফুটেজ শেয়ার করেছে। কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।
ইরানি হামলার দ্বিতীয় ধাপ
শনিবার ভোরে ইরান নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তেল আবিব এবং জেরুজালেমে বিস্ফোরণ এবং সাইরেন শোনা গেছে, বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূমিতে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নতুন হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং বাসিন্দাদের আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয়
মধ্যরাতের কিছুক্ষণ পরেই তেহরানের মধ্যাঞ্চলে জোরে বিস্ফোরণ এবং ইরানি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুলির শব্দ শোনা গেছে, কারণ ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে। রাজধানীতেও বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়েছে।
