Home বাংলাদেশ পিরোজপুরের শতবর্ষী ভাসমান নৌকার বাজার

পিরোজপুরের শতবর্ষী ভাসমান নৌকার বাজার

0

পিরোজপুরের নেছারাবাদে ঐতিহ্যবাহী ভাসমান নৌকার বাজার বর্তমানে জমজমাট। শতাব্দী প্রাচীন এই কুঁড়েঘরটি বর্ষা মৌসুমে নির্মিত হয়েছিল। ভাসমান নৌকার বাজারটি নেছারাবাদ উপজেলার আটগর কুড়িয়ান ইউনিয়নের আটগর খালের উপর অবস্থিত এবং প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।

সপ্তাহে দুই দিন, সোম ও শুক্রবার আটগার কুড়িয়ানা খালে হাট বসে। সকাল থেকে লাঞ্চ পর্যন্ত বিক্রি। পেয়ারা ও আমড়া সাধারণত পিরোজপুরের নেছারাবাদ, জলকাটির ভিমরুলী এবং বরিশালের বানারীপাড়া সহ দক্ষিণের জেলায় জন্মে। বর্ষা মৌসুমে যখন ফসল ও পেয়ারার উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, তখন কৃষকরা নৌকা ব্যবহার করে ভাসমান বাজারে ছোট ছোট নৌকায় করে বিক্রি করে।

এ বাজারটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। জৈষ্ঠ থেকে আশ্বিন পর্যন্ত নৌকা বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। পুরো ঋতু শুরু হয় আষাঢ় মাসে। তখন খালের পানিতে ভাসতো বাহারি নৌকা বাণিজ্য। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় নৌকার বাজার হিসেবে বিবেচিত।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে পেয়ারা, আমড়া ও ছাই ধরা এবং গরুর চারণ সংগ্রহের জন্য নৌকার কদর বেশি। খালের পাড়ের বাগানে মূলত আমড়া ও পেয়ারা জন্মে, যা সংগ্রহ করতে হয় নৌকায়। একই সময়ে জেলেদেরও মাছ ধরার জন্য নৌকার প্রয়োজন হয়, কারণ এটি প্রধান জলের এলাকা। আবার এসব এলাকার প্রায় প্রতিটি পরিবার ঘুরে বেড়ানোর জন্য নিজস্ব নৌকা ব্যবহার করে। তারাই নৌকার বাজারের প্রধান ক্রেতা।

হাটের দিন কারিগররা নৌকা কিনে ট্রলারে করে বাজারে নিয়ে যায় বলে জানান নৌকার ব্যবসায়ী স্বপন হাওলাদা। বিক্রি ভালো হলে প্রতিটি হাটে ৫০ থেকে ৬০টি নৌকা বিক্রি হয়। প্রতিটি নৌকার বিজয় ৭০০-৮০০ টাকা। মাঝে মাঝে লোকসান গুনতে হয়।
নৌকা নির্মাতা সুমন মন্ডল জানান, বর্তমানে সুন্দর কাঠ পাওয়া যাচ্ছে না। কড়ই, চম্পল ও মেহগনি কাঠ দিয়ে তৈরি এই নৌকা। আমার পূর্বপুরুষরা এই পেশায় কাজ করেছেন। যখন থেকে আমি এটি সম্পর্কে জানতে পেরেছি, আমি নৌকা তৈরি করছি। দুই মাস পরিশ্রমের পর বাকি মাস পরিবার নিয়ে কাটাতে হবে। পড়া শিশুদের জন্য খুব কঠিন।

আটঘর কিরিয়ানা পরিষদ ইউনিয়নের সভাপতি সবজী মজুমদার বলেন, এ বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হয়রানি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে পর্যটকদের বসার জন্য এখানে বড় ছাতা ও কুঁড়েঘরও রয়েছে। বাজার নিয়েও আমাদের পরিকল্পনা আছে।

ডাঃ। নাশারাবাদ পৌরসভার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরোজমান কারবালা বলেন: ঐতিহ্যবাহী এই বাজারটি ১০০বছরেরও বেশি আগে কাজ শুরু করে। দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এখানে আসেন। সরকার সর্বদা তাদের নিরাপত্তার কথা বলেছে এবং জেলা আধিকারিকরা সর্বদা সতর্ক থাকেন যাতে কটেজের সুনাম নষ্ট না হয়। এ ছাড়া পর্যটকদের জন্য একটি বিশ্রামাগার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version