আজ (মঙ্গলবার) প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সময় জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রের বিভিন্ন অভিযোগে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে আড়াই লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেয়। সেনা সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন দাবি শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য করে। শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেয়েছে। গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একই সঙ্গে গড়ে ওঠে।
আগের দিন প্রায় দুই হাজার পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সম্পূর্ণ ও অবৈধভাবে শেখ হাসিনার ধানমুন্ডির বাসভবন সোদা সদন ঘেরাও করে। এ সময় শেখ হাসিনা ফজরের নামাজ আদায় করছিলেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা শেখ হাসিনাকে হয়রানি ও মিথ্যাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে সৌদা সদন থেকে নিয়ে যায়। যৌথবাহিনীর সদস্যরা তাদের ঢাকার সিএমএম আদালতে আটক করে। তৎকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের একটি পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিচার শুরু হওয়ার প্রায় দুই ঘণ্টা আগে একজন মহানগর বিচারক আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার জামিন আবেদন অবৈধভাবে খারিজ করে দেন।
শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করতে চেয়েছিল। শেখ হাসিনা দরবার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে তৎকালীন সরকারের দুষ্ট রাজনৈতিক চক্রান্তের প্রতিবাদে প্রায় ৩৬ মিনিট জ্বালাময়ী ভাষণ দেন।
গ্রেফতারের আগে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশে এক চিঠিতে গণতন্ত্র রক্ষায় মনোবল না হারিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য দেশবাসীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন ও গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর চলমান প্রতিরোধ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং বঙ্গবন্ধু কন্যাদের আপোষহীন ও দৃঢ় অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ১১ জুন তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ১১ মাস কারাভোগের পর শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে হয়। দেশবাসীর অবিরাম দাবি।
এদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রাখতে তার পিতার আপসহীন অবস্থানের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে শেখ হাসিনার যাত্রা শুরু হয়।
গণমুক্তি আন্দোলনে শেখ হাসিনা অনেক কারাবরণ ও নির্যাতন সহ্য করেন। অসংখ্যবার মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। জনগণের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে তিনি সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্ভীক সৈনিকের মতো নিরন্তর অগ্রযাত্রা চালিয়ে যাচ্ছেন। সকল প্রতিকূলতাকে জয় করে জনগণের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশেই নয় সারা বিশ্বে।