সনাতনধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। শেষ সময়ে নারায়ণগঞ্জের মণ্ডপে মণ্ডপে রং-তুলির আঁচড়ে প্রতিমা সাজসজ্জার কাজ চলছে। প্রতিমা নির্মাতারা জানান, প্রতিমা ও মণ্ডপ তৈরির প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তারা এটা নিয়ে ব্যস্ত।
বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় নগরীর সাহাপাড়া মন্ডপে, মীনাবাজার এলাকার গোপীনাথ জিউর আখড়া মন্দির, বঙ্গবিহারী এলাকার হনুমান ঝুর মন্দির ও গলাচিপা এলাকার রামকানাই ঝুর মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে জোরেসোরে।রং তুলির আঁচরে প্রতিমা সাজানোর কাজ করছেন কারিগররা। এছাড়া বাঁশ, বেত, তালপাতা, খড়, কাগজসহ বিভিন্ন উপাদান দিয়ে মণ্ডপ সাজানোর কাজ চলছে।
সাহাপাড়া পূজা মণ্ডপে প্রতিমার রঙের কাজ করছেন মাস্টার নরেশ চন্দ্র। তিনি জানান, দুর্গা প্রতিমা তৈরি করতে প্রায় ১৫ দিন সময় লেগেছে। এখন আমি রং করার কাজে ব্যস্ত। আগামী দুই দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। আটজন কারিগরের প্রায় আড়াই মাস লেগেছে সব প্রতিমা তৈরি করতে। খুব শীঘ্রই প্রতিমা কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সাহাপাড়া পূজা মণ্ডপের কর্তা অর্পণ দাস বলেন, মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করে আমরা রং করার কাজ শুরু করেছি এবং ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
প্রতিমা ও মণ্ডপ সাজসজ্জার ব্যস্ত মাস্টার প্রাণ গোপাল পাল পানু। তিনি জানান, প্রতিমা তৈরির ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এই মন্দিরের প্রতিমা তৈরি করতে আড়াই মাস সময় লেগেছে। রং করার কাজ প্রায় শেষের দিকে। অন্যথায়, সাজসজ্জার জন্য শাড়ি এবং আনুষাঙ্গিক বাকি আছে। কাজ শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে। এ ছাড়া নিতাইগঞ্জ পূজা মণ্ডপ, ডালপট্টি, রামকানাই, গোয়ালপাড়া মন্দির, বোয়ালপাড়া স্কুল মন্দির, বঙ্গবিহারী মন্দিরসহ প্রায় ১৪টি মন্দিরে প্রতিমা তৈরি করেছি।
তিনি বলেন, একটি প্রতিমা তৈরি করতে প্রায় ২৫,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকা খরচ হয়। তারা বাঁশ, কাঠ, খড়, , সুতো, পাট, বিভিন্ন মাটি ও রং ব্যবহার করে প্রতিমা তৈরি করে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উৎসবের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপুন জানান, নারায়ণগঞ্জে ২১৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সেই লক্ষ্যে জোরেসোরে কাজ চলছে। প্রতিটি পূজা মন্ডপের প্রায় ৮০% কাজ শেষ হয়েছে। এখন আমরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অপেক্ষা করছি। আগামী ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে আমাদের পূজার কার্যক্রম শুরু হবে। ১৩ অক্টোবর বিজয় দশমীর মধ্য দিয়ে ৫ দিন ব্যাপী ধর্মীয় উৎসব শেষ হবে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তন হলেও নারানগঞ্জে দখলদারিত্বের কোনো হুমকি ছিল না। দুর্গাপূজা শারদীয় উৎসব উপলক্ষেবিএনপি, হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন সহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের সাথে মতবিনিময় সভা হয়েছে। তারা সবাই আমাদের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশ, প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হবে এবং আমরা আশা করি উৎসবের কার্যক্রম সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ কমিশনার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, সনাতন ধর্মের দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সব পূজা মণ্ডপে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনী রয়েছে। , আনসার, RAB ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি তারা বেসামরিক পোশাক পরে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি করবে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটনার সম্ভাবনা নেই।