জনপ্রিয় বাংলাদেশী কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ “টিন গোয়েন্দা”-এর লেখক ও স্রষ্টা রাকিব হাসান মারা গেছেন।
আজ বুধবার, হৃদরোগের কারণে ডায়ালাইসিসের চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। তার বয়স ছিল ৭৫ বছর।
রাকিব হাসানের জন্ম ১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায়। বাবার চাকরির কারণে, তিনি তার শৈশব ফেনীতে কাটিয়েছেন, যেখানে তিনি তার স্কুল জীবন শেষ করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হন। শিক্ষাজীবন শেষ করার পর বিভিন্ন চাকরি করলেও অফিসের কাজের রুটিন জীবনে তিনি কোনও তৃপ্তি পাননি। অবশেষে, তিনি জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে লেখালেখি বেছে নেন।
রাকিব হাসান তার লেখালেখির জীবন শুরু করেন “সেবা প্রকাশনী”-এর মাধ্যমে। তিনি প্রথমে বিশ্বখ্যাত ক্লাসিক উপন্যাস অনুবাদ করে সাহিত্যের জগতে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে, তিনি টারজান, ডিটেকটিভ রাজু এবং রেজা-সুজা সিরিজ সহ ৪০০ টিরও বেশি জনপ্রিয় বই লিখেছিলেন। তবে, তার পরিচয়ের সবচেয়ে সংজ্ঞায়িত অংশ হল “টিন গোয়েন্দা” সিরিজ, যা অসংখ্য বাংলাদেশী কিশোর-কিশোরীর প্রিয় সঙ্গী হয়ে ওঠে।
এই সিরিজটি মূলত রবার্ট আর্থারের “দ্য থ্রি ইনভেস্টিগেটরস” দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল, কিন্তু রাকিব হাসানের অনন্য গল্প বলার মাধ্যমে এটি সম্পূর্ণ নতুন জীবন লাভ করে। এটি নিজস্বভাবে বাংলাদেশী সাহিত্যের একটি অংশ হয়ে ওঠে। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হাজার হাজার তরুণ পাঠকের প্রিয় লেখক হয়ে ওঠেন।
নিজের নামে লেখার পাশাপাশি, তিনি বিভিন্ন ছদ্মনামও ব্যবহার করতেন। শামসুদ্দিন নওয়াব নামে তিনি জুলস ভার্নের রচনা অনুবাদ করেছিলেন।
বাংলাদেশী পাঠকদের কাছে, রাকিব হাসান কেবল একজন লেখকই ছিলেন না – তিনি একটি সমগ্র প্রজন্মের শৈশব এবং কৈশোরের একজন লালিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন।