সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক নেতাদের লক্ষ্য করে সংঘটিত এই উদ্বেগজনক ঘটনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে এই ঘটনার মোকাবিলা করার অঙ্গীকার করেছে।
“রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা—বাংলাদেশের ভেতরে হোক বা এর সীমানার বাইরে—সহ্য করা হবে না এবং যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি করা হবে,” মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং কর্তৃক জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
সরকার দেশে এবং বিদেশে গণতান্ত্রিক নীতি এবং আইনের শাসন সমুন্নত রাখার প্রতি তার অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে, এতে আরও বলা হয়েছে।
“বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সোমবার নিউইয়র্কে সংঘটিত উদ্বেগজনক ঘটনার জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করছে, যেখানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) নেতা আখতার হোসেন এবং তাসনিম জারাকে লক্ষ্যবস্তু এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
“এই আক্রমণ ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সহযোগী এবং সমর্থকদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে,” বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে। এই নিন্দনীয় কাজটি হাসিনার শাসনামলে বিকশিত বিষাক্ত ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি স্পষ্ট এবং বেদনাদায়ক স্মারক – একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দৃঢ়ভাবে ভেঙে ফেলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, “প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সঙ্গী রাজনৈতিক নেতাদের সফরের সময় সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিক সতর্কতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করেছিল।” জন এফ. কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর, প্রতিনিধিদলকে প্রথমে একটি নির্দিষ্ট ভিভিআইপি গেট দিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এবং একটি বিশেষভাবে সুরক্ষিত পরিবহন ইউনিটে ওঠানো হয়েছিল, বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তবে, অপ্রত্যাশিত এবং শেষ মুহূর্তের ভিসা-সম্পর্কিত জটিলতার কারণে, প্রতিনিধিদলকে পথ পরিবর্তন করে বিকল্প প্রস্থানের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হয়েছিল।
“অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাজনৈতিক নেতাদের জন্য অব্যাহত ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার এবং নিরাপত্তা সুবিধার জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা সত্ত্বেও, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দুঃখজনকভাবে অনুরোধটি প্রত্যাখ্যান করেছে,” এতে বলা হয়েছে, এই ত্রুটি অসাবধানতাবশত প্রতিনিধিদলের সদস্যদের ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঘটনার পরপরই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার – নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে – দ্রুত এবং আইনানুগ প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের সাথে যোগাযোগ করেছে। “আমাদের জানানো হয়েছে যে একজন ব্যক্তিকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বর্তমানে বিষয়টির আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলছে,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ঘটনার ফলে, প্রধান উপদেষ্টা এবং সরকারী প্রতিনিধিদলের সকল সদস্যের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে।
“অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিদেশে তার প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এবং স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে ঘনিষ্ঠ এবং অবিচ্ছিন্ন সমন্বয় বজায় রেখেছে,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
