দেশের অন্যতম বৃহৎ ঈদ জামাত শোলাকিয়া ঈদগাহে শনিবার সকাল ৯টায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে ১৯৮তম ঈদ-উল-আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা দলে দলে জায়নামাজ বহন করে বিশাল মাঠে আসতে শুরু করেন। ঈদের নামাজের ইমামতি করেন বড় বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
নামাজের পর ঈদের খুৎবা আদায় করা হয় এবং বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের আগমনের সুবিধার্থে রেল কর্তৃপক্ষ ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করে – একটি ময়মনসিংহ থেকে এবং অন্যটি ভৈরব থেকে।
নিরাপত্তার কারণে, অংশগ্রহণকারীদের কেবল জায়নামাজ, টুপি এবং মুখোশ বহন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
মুসল্লিদের সহায়তার জন্য অনুষ্ঠানস্থলে বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক এবং বেশ কয়েকটি মেডিকেল টিম মোতায়েন করা হয়েছিল।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজাবে রহমান বলেন, শোলাকিয়ায় ১৯৮তম ঈদুল আজহার জামাত হাজার হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঐতিহ্য অনুসারে, নামাজ শুরুর আগে সংকেত হিসেবে গুলি চালানো হয়েছিল – ১৫ মিনিট আগে তিনটি গুলি, ১০ মিনিট আগে দুটি গুলি এবং নামাজের পাঁচ মিনিট আগে একটি শেষ গুলি।
ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কাজেম উদ্দিন বলেন, অনুষ্ঠান চলাকালীন বহুস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল, যার মধ্যে ছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর দুটি প্লাটুন, পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং আনসার সদস্যরা।
এছাড়াও, সাদা পোশাকের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা নজরদারি বজায় রেখেছিলেন, এবং সিসিটিভি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার এবং পুলিশ ড্রোন অনুষ্ঠানস্থল এবং এর প্রবেশপথগুলি পর্যবেক্ষণ করেছিল।
শোলাকিয়া ঈদগাহ ১৯৫০ সালে সাত একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যার ৪.৩৫ একর জমি মসনদে-এ-আলা ঈসা খাঁর ষষ্ঠ প্রজন্মের উত্তরসূরী দেওয়ান হযরত খানের বংশধর দেওয়ান মান্নান দাদ খান দান করেছিলেন।
স্থানীয় সূত্র অনুসারে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে প্রথম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে প্রায় ১,২৫,০০০ মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন – যার ফলে এটি ‘শোয়া লাখিয়া’ নাম লাভ করে, যা পরবর্তীতে ‘শোলাকিয়া’ নামে রূপান্তরিত হয়।