প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস উপস্থাপনের উপর জোর দেন।
সোমবার বিকেলে ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, মন্ত্রণালয়ের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে বিভিন্ন স্থাপনা ও অবকাঠামো নির্মাণ করে দেশের মুক্তিযুদ্ধের বিভ্রান্তিকর ইতিহাস উপস্থাপন করা হয়েছে।
এই অবকাঠামোগুলিতে যুদ্ধক্ষেত্রের কোনও বিস্তারিত বর্ণনা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কোনও বর্ণনাও নেই, বরং একটি পরিবারের ছবি ও উপকরণ দিয়ে কেবল অতিরঞ্জিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, উপদেষ্টা উল্লেখ করেছেন যে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন’ শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের জন্য ২৩০ মিলিয়ন টাকা (২৩ কোটি টাকা) বরাদ্দ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়ার পরেও কোনও উল্লেখযোগ্য গবেষণা পরিচালিত হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা আরও বলেন, শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সুবিধাভোগী শ্রেণী হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত সম্পত্তি, সুযোগ-সুবিধা এবং অর্থের পক্ষপাতমূলক ব্যবহার করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তৈরি অবকাঠামোতে বসে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছিলেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে থাকা অরক্ষিত সম্পত্তিগুলি মূল্যবান সম্পদ, তাই এই সম্পত্তিগুলির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
প্রধান উপদেষ্টা অবিলম্বে একজন পরামর্শদাতা নিয়োগ এবং ট্রাস্টের অধীনে থাকা সম্পত্তিগুলি কীভাবে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় এবং ট্রাস্টের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা নির্ধারণের জন্য একটি পরবর্তী কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ট্রাস্টের কাজ এবং ট্রাস্টের সম্পত্তিতে কী কী উদ্যোগ স্থাপন করা যেতে পারে সে সম্পর্কে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া উচিত। “এই ট্রাস্ট পুনরুজ্জীবিত করতে হবে,” তিনি যোগ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস আগামী দিনে মন্ত্রণালয়ের সকল প্রকল্পের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজ করার পরামর্শ দেন।
আজকের সভায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত ও বাস্তবায়িত উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম এবং পরবর্তী ছয় মাসের কর্মপরিকল্পনা প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হয়।