বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষিত নির্বাচনী সময়সূচীতে সন্তুষ্ট নয়। পবিত্র রমজান মাসে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর ব্যাপারে দলটি আপত্তি জানিয়েছে। তারা মনে করে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ জাতির প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বিএনপি বারবার ডিসেম্বরের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর দলটি এখনও তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করেনি।
বিএনপি’র ডাকে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে আন্দোলনে যোগদানকারী সমমনা দল এবং মিত্রদের সাথে আলোচনা করে ঈদের ছুটির পরে পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করবে দলটি।
প্রধান উপদেষ্টা গত শুক্রবার বলেছিলেন যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন যে নির্বাচন কমিশন তার শুক্রবারের ঘোষণার ভিত্তিতে বিস্তারিত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।
বিএনপি নেতাদেরও উদ্বেগ রয়েছে যে প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনী সময়সূচী ঘোষণা বহিরাগত দলগুলির দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। তবে, ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে দলটি এখনই কোনও পদক্ষেপ নেবে না। ঈদের ছুটির পরে আলোচনার ভিত্তিতে এটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোর সাথে আলাপকালে বলেন, “আমরা (একযোগে আন্দোলনে থাকা মিত্র এবং সমমনা দল) সকলের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করেছি।
শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর বিএনপি একটি সভা ডেকেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য পর্যালোচনা করে দলীয় নেতারা ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।
এদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি মনে করেন যে প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক ঘোষিত পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের সময়সূচীতে সমগ্র জাতি সম্পূর্ণ হতাশ। তিনি বিশ্বাস করেন যে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব।
ঈদের দিন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সংবাদকর্মীর সাথে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে—এপ্রিল—তা বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত নয়।” এপ্রিল মাসে তীব্র তাপদাহ, ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের ঝুঁকি থাকে… রমজানের ঠিক পরেই এটি আসে এবং পাবলিক পরীক্ষাগুলি সেই সময়েই নির্ধারিত হয়। আমরা বিশ্বাস করি না যে সময়সীমা আন্তরিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। উপরন্তু, রমজানে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো অত্যন্ত কঠিন হবে।”
বিএনপি নেতারা যুক্তি দেন যে এপ্রিলের প্রথমার্ধে প্রতিকূল আবহাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। তাছাড়া, রমজানে প্রচারণা এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে যেখানে তারা নির্বাচন আরও বিলম্বিত করার কথা বিবেচনা করতে পারে।
