গণ–অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার দলের অনেক নেতা গোপনে দেশ ছেড়ে চলে যান। এরপর দীর্ঘ একমাস পর চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতের নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার দরগাহে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে আলোচিত নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে পরিবারসহ দেখা যায়।
মনিরুল হক, একজন বাংলাদেশী নাগরিক যিনি সবেমাত্র একটি ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তার চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ করেছিলেন, দিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়ার সমাধিতে তার দরগাহে তাকে দেখতে পান। মনিরুল বলেন, শামীম ওসমান নিজামউদ্দিন আউলিয়ার কবরে শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করান । এ সময় তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।
সিকিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর, মুনিরুল হক, একজন ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা, বাংলাদেশে ফিরে আসার আগে ভারতজুড়ে ভ্রমণ করেছিলেন। সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে এক সন্ধ্যায় তিনি নিজামুদ্দিন দরগায় বসেছিলেন। এমন সময় হঠাৎ করেই “বাংলাদেশ” শব্দটা শুনলাম এবং দেখলাম, লোকেরা প্রার্থনা করছে এবং বাংলাদেশ নামটা চিৎকার করছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে তার সেল ফোনের ক্যামেরা চালু করে ছবি তোলা শুরু করেন। মানিরোল এই ভিডিওটি মিডিয়ার সাথে শেয়ার করেছেন এবং সেই সময়ের ঘটনা ব্যাখ্যা করেছেন।
ভিডিওতে উর্দু প্রার্থনাটি বাংলায় অনুবাদকরলে হয়, ‘”শামীম ওসমান সাহেবকে সালাম পৌঁছানোর সামর্থ্য দাও। অনুগ্রহ করে শেখ হাসিনাকে সাফল্য দান করে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার ভাগ্য দান করো।’
সেখানে শামীম ওসমানকে দেখে অবাক হয়েছেন বলে জানান মনিরুল হক। এ সময় শামীম ওসমানের সঙ্গে সম্ভবত পরিবারের আরও তিনজন সদস্য ছিলেন। এরপর শামীম ওসমানের পিছু নেন তিনি। তিনি শামীম ওসমান ও তার পরিবারকে দরগার পাশে থাকা খাবার জায়গায় শামীম ওসমান ও তার পরিবারের সদস্যদের তবারক বিতরণ করতে দেখেন তিনি। এমনকি যিনি দোয়া পড়ছিলেন, তাকে টাকাও দিতে দেখেন।
মুনিরুলের দাবি, শামীম উসমানের সঙ্গে একবার দেখা হয়েছিল। তবে কোনো কথা বিনিময় হয়নি। শামীম উসমানের সঙ্গে দেখে করে তিনি হতাশ হয়েছেন বলেও জানান ওই বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।
গত ১৯ জুলাই বিকেলে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া বঙ্গবন্ধু স্ট্রিটে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর শামীম উসমান ও তার সহযোগীরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ পর্যন্ত শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে।
