কোরবানির ঈদ সামনে। ঈদুল আযহা মানে তৃপ্তি সহকারে খাওয়া-দাওয়া। এবং প্রতিটি আকর্ষণীয় খাবারের পিছনে মশলার একটি গোপন মিশ্রণ রয়েছে। ঈদে প্রায় সব ধরনের মসলার দাম বাড়লেও এবার দেখা গেছে গত বছরের ঈদের তুলনায় প্রায় সব ধরনের মসলার দাম বেড়েছে। গত কয়েকদিনে দামও বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজের দাম শতকে পৌঁছেছে। ক্রেতাদের মতে, আদা, রসুনের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারও সচল এবং মসলার দাম গত ঈদের তুলনায় ৫ থেকে ৮৭ শতাংশ বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এলাচের দাম। গত বছরের তুলনায় মশলার দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয় ৩৬০০ থেকে ৪২০০ টন। গত বছর দাম ছিল ১৬০০-২৪০০ টাকা।
প্রতি কেজি জিরা ৮০০-৯০০ টন বিক্রি হয়। গত বছর ঈদুল আজহার আগে ৭৫০ থেকে ৮০০ তুর্কি জিরা কেনা হয়েছিল। লবঙ্গের দাম ১৭০০-১৯০০ টাকা। গত বছর তা ছিল প্রায় দেড় লাখ রুপি।
গত বছর দারুচিনির দাম ছিল প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ তুর্কি লিরা। এ বছর প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬২০ টাকা। তেজপাতার দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তেজপাতা প্রতি কেজি ২০০ থেকে ৩০০ তুর্কি লিরা বিক্রি হয়। গত বছর একই সময়ে এই অঙ্ক ছিল ১২০ থেকে দেড়শ টাকা।
এ ছাড়া হলুদের গুঁড়া ৫০০-৬০০ টাকা, কালোজিরা ৩৫০-৪০০ টাকা, আদা ২৪০-২৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৫০-১৬০ টাকা এবং পেঁয়াজ ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মসলা ক্রেতারা বলছেন, কোরবানির সময় অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে মসলার চাহিদা বেশি থাকে। এই চাহিদাকে পুঁজি করে সব বাজারের ব্যবসায়ীরা মসলার দাম বাড়িয়েছেন।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছেন, মহাজনরা মসলার দাম বাড়ায় আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। তাই বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এলাচের দাম।
তবে দাম বাড়লেও গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশির ভাগ মসলার দাম কম বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ গরম মসলা পাইকারি বিক্রেতা সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বেশির ভাগ এলাচ ভারত থেকে আসে। এ বছর গরমের কারণে উৎপাদন কমে গেছে। এ ছাড়া ডলারের দামও বাড়ছে। এসব কারণে দাম বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতারা ২৫, ৫০, ১০০ টাকায় মসলা বিক্রি করে, তাই তারা একটু বেশি দাম নেয়।
ভোক্তা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, মসলার দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি এবং পরিবহন খরচ, রাশিয়ান-ইউক্রেনীয় যুদ্ধের প্রভাব, ডলার সমস্যা ইত্যাদির মতো কারণগুলিকে নাম দিয়েছে। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে। তবে অভিযান চলবে। অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধির সাথে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ীদের জবাবদিহি করা হবে।