চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাস এবং আরও ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করেছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (কোতোয়ালী জোন) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান মঙ্গলবার চট্টগ্রামের একটি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, চার্জশিটে চিন্ময় দাস এবং আরও ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশের অনুরোধে ৫ মে আদালত আনুষ্ঠানিকভাবে চিন্ময়কে আইনজীবী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর চিন্ময় দাসের জামিন আবেদনের রায়ের পর আদালতের সংঘর্ষের সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। সহিংসতার সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
হত্যার পর সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও, পুলিশের উপর আক্রমণ, সরকারি কাজে বাধা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের উপর হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে আরও পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ছয়টি মামলায় মোট ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ২১ জনের বিরুদ্ধে সরাসরি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস এবং রাজীব ভট্টাচার্য স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবাবপত্রে জানা গেছে যে রিপন দাস ধারালো অস্ত্র দিয়ে আইনজীবীর ঘাড়ে দুবার আঘাত করেন, এবং চন্দন দাস তাকে কুপিয়ে ফেলেন।
সাদা শার্ট এবং কালো প্যান্ট পরিহিত আইনজীবীকে ১৫ থেকে ২০ জন লাঠি, ইট এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, চিন্ময় দাসের প্ররোচনা এবং নির্দেশেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, যে কারণে তাকে মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর, চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় দাস এবং আরও ১৮ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেন।
পরে ফিরোজ খানকে বিএনপিতে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই মামলায় ২৫ নভেম্বর ঢাকায় চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়।