সম্প্রতি এক জনসভায় নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্যদের বিরুদ্ধে অশালীন ভাষা ব্যবহারের অভিযোগে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কাছে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) তিন নেত্রীসহ ছয়জন নারী।
সোমবার দুপুরে ঢাকা জজ কোর্টের একজন আইনজীবীর মাধ্যমে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে কেন মানহানির মামলা দায়ের করা হবে না, সে বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে নোটিশে। কোনও ব্যাখ্যা না দিলে, মহিলা বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্যদের মানহানির জন্য হেফাজতের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোটিশটি পাঠানো ব্যক্তিরা হলেন – এনসিপির উত্তরাঞ্চলের সংগঠক দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী এবং সদস্য সৈয়দা নীলিমা দোলা ও নীলা আফরোজ, লেখক ও কর্মী উম্মে রায়হানা, শিক্ষিকা উম্মে ফারহানা এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও সাংস্কৃতিক কর্মী ক্যামেলিয়া শারমিন। নোটিশটি ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’-কে সম্বোধন করা হয়েছে।
তবে সৈয়দা নীলিমা দোলা প্রথম আলোকে বলেন যে, তারা তিনজনই দলীয় নির্দেশে নয়, ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে নোটিশের সাথে জড়িত।
আইনজীবী পলাশ নোটিশে হেফাজতকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “আপনি বা আপনার সংগঠন শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বা সকল মতের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করেন না। এ কারণেই আপনি বাংলাদেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। আপনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মহিলা বিষয়ক সংস্কার কমিশনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অসম্মানজনক এবং মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশ করেছেন। এটি কেবল মহিলা বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতি মানহানিকর এবং অবমাননাকর নয়, বরং বাংলাদেশের সকল নারীর প্রতিও।”
নোটিশে বলা হয়েছে যে, হেফাজত কমিশনের প্রতিবেদন সম্পর্কে কমিশন বা সরকারের সাথে কোনও গঠনমূলক আলোচনায় অংশ নেওয়ার পরিবর্তে কমিশনের সম্মানিত এবং নিবেদিতপ্রাণ নারী নেত্রীদের মৌখিকভাবে গালিগালাজ করেছে। এটি আইন এবং ধর্মীয় নীতি উভয়ের বিরুদ্ধেই স্বীকৃত। তবুও, আপনি এই ধরনের অবমাননাকর আচরণকে অকপটে গ্রহণ করেছেন এবং অন্যদের উৎসাহিত করেছেন, তাই এটি একটি রাজনৈতিক সংগঠন এবং ব্যক্তিগত সদস্য হিসাবে আপনার সম্মিলিত দায়িত্বকে বোঝায়।
এই ধরনের আপত্তিকর আচরণ দণ্ডবিধির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারা অনুসারে শাস্তিযোগ্য। এই ভিত্তিতে, আইনি নোটিশ পাঠানো হচ্ছে।