সারাদেশে আইন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
হাতে আরও অন্তত ৪০৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেলের মধ্যে তাদের আটক করা হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গত ১৩ দিনে সারাদেশে ১০ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রথম আলোর কর্মকর্তারা গত ১৭ জুলাই থেকে সারাদেশের শহর, জেলা ও থানায় মামলা ও গ্রেপ্তারের তথ্য সংগ্রহ করছেন। গতকাল পর্যন্ত সারাদেশে মোট ১০ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ১ জুলাই কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চলমান কর্মসূচি শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ১৫ জুলাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের পর সারাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন স্থানে গ্রেপ্তার করে।
এ পর্যন্ত গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পাশাপাশি উভয় দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। এ ছাড়া বিএনপির পাশাপাশি আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সিনিয়র নেতারাও গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এছাড়া ছাত্রদেরও গ্রেফতার করা হয়। তবে পুলিশ বলছে, সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদেরই গ্রেপ্তার করা হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেল থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ৫৬ জনকে আটক করা হয়েছে। রাজধানীতে মোট ২,৮২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজধানীতে ২৪৩টি মামলা হয়েছে।
মহানগরীর বাইরে দামরাই, সাভার, আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও দোহার থানায় গতকাল পর্যন্ত ২৩টি মামলা হয়েছে। গতকাল এসব এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার নগরী ও চট্টগ্রাম জেলায় ৩১টি মামলায় আরও ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের অধিকাংশই বিএনপির নেতা-কর্মী। রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ৯৫৭ জনকে আটক করা হয়েছে।
রোববার বিকেল থেকে গতকাল সকালের মধ্যে ফেনীতে বিএনপির আরও সাত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সদর কারিগরি মডেল থানায় বিস্ফোরক ও নাশকতার অভিযোগে গত ১১ দিনে মোট ৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেড় শতাধিক নির্বাহী ও কর্মীকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেন বিএনপির আঞ্চলিক সদস্য সচিব আরালউদ্দিন।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছাড়াও রাজশাহী, রামপুর ও বগুড়ায় ঘটনা ও গ্রেপ্তার তুলনামূলকভাবে সাধারণ। রাজশাহী মহানগরীতে এ পর্যন্ত ১৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেখানে নতুন ১৮ জনকে আটক করা হয়। রাজশাহীতে মোট ৩৮৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বগুড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত এ জেলায় ১৫টি মামলায় ১৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রংপুরে আরও ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। রংপুর নগরী ও অঞ্চলে ২২টি মামলায় ২৪৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে রামপুর মহানগরীতে ১৮৬ জনকে এবং একই এলাকায় ৪৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
অন্য কোথাও কোটা সংস্কার আন্দোলনের মামলা নেই, তবে পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে। যশোরে গত ২৪ ঘণ্টায় পুরনো মামলায় ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৬ জুলাই থেকে গতকাল পর্যন্ত সেখানে ১১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংশোধন
গতকাল প্রথম আলো ভুলভাবে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা ১০,০২৮ বলে জানায়। প্রকৃত সংখ্যা 9625।