সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কারে আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ দাবি করে গতকাল মধ্যরাতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কোটা সংস্কার সমর্থকরা। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মশাল মিছিল করে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় আন্দোলনকারীদের ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এদিকে গতকাল রাতে ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তিন নেতা। তারা হলেন সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিভাগের সচিব মাছুম শাহরিয়ার, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ শাখার সহকারী সম্পাদক রাতুল আহমেদ ওরফে শ্রাবণ এবং গ্রন্থাগার সম্পাদক আশিকুর রহমান ওরফে জিম। এবং প্রকাশনা, অনুষদ. অধিকার
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে খবর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে গতকাল মধ্যরাতে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ হয়। বেলা ১১টার দিকে কোটা সংস্কারের শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন। সাধারণত 22:00 এর পরে মেয়েদের হলগুলিতে প্রবেশ বা বের হতে দেওয়া হয় না, তবে তারা বের হয়ে মিছিলে যোগ দেয়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা শিক্ষার্থীদের মিছিল সূর্যসেন হল ও বিজয়া একতারা হলের গেটের দিকে যেতে বাধা দেন। কিন্তু উত্তেজিত ছাত্ররা তাদের মিছিলে নেতৃত্ব দেয়। পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ড. এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘অধিকার চাই, রাজাকার হলাম’, ‘এক, দুই, তিন, চার, আমরা সবাই রাজাকার’ স্লোগান দিতে থাকে। শিক্ষার্থীরা বলেছেন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের রাজাকারের সন্তান বলেছেন। একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কখনই এদেশের ছাত্রদের রাজাকারের সন্তান বলা উচিত নয়। এমনকি তার কথার প্রতিবাদে আমরা রাতে রাস্তায় নেমেছি। শেখ হাসিনা তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন।
কে তুমি আর আমি কে?’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা পদ্ধতির সমর্থনে ‘রাজকার, রাজাকার’ স্লোগানে রাতভর বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। এর আগে বটলায় শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হোস্টেলে স্লোগান দেয়। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল প্রদক্ষিণ করে মিছিল করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ঘেরাও করে রাখে। এসব আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কারকারীদের রাজাকানের নাতি বলেছেন, যা শিক্ষার্থীদের জন্য অপমানজনক এবং বর্তমান আন্দোলনকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাবিত করার উপায়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: গতকাল বেলা ১১টার দিকে জিরো পয়েন্ট নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকে এসে বিভিন্ন হল ও হাট থেকে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এ সময় ‘তোমাকে আমি, রাজাকার রাজাকার’, ‘এ বাংলার মাটি রাজাকারের ঘাঁটি’, ‘আমি অধিকার চেয়েছি, আমি রাজাকার হয়েছি’ প্রভৃতি স্লোগানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। . এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে এগারোটার দিকে হঠাৎ করেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাবিলের প্রধান ফটকের কাছে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমির আলী হলে হঠাৎ কিছু শিক্ষার্থী বিক্ষোভ শুরু করে। এরপরই বিভিন্ন শ্রেণির শত শত শিক্ষার্থী মিছিলে যোগ দেয়।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: ওই দিন রাত ১২টার দিকে কোটা সংস্কারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল গিয়ামুর থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দিকে যায়। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি জিয়া মোড়ে ফিরে আসে।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়: ‘তোমাকে আমি কে- রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে গতকাল মধ্যরাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহপরাণ হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়: শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে স্লোগান দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন হল শেখ লুৎফর রহমান হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল করে। এ সময় তারা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘এ বাংলার মাটি- রাজাকারের ঘাঁটি’, ‘শেরেবাংলার মাটি, রাজাকারের ঘাঁটি’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাঁঠালতলে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে। এছাড়াও মহিলা ছাত্রীরাও মিছিলে যোগ দিয়ে একমাত্র ছাত্রাবাসের তালা ভেঙে দেয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার, রাজাকার’, ‘কে কিনা, কে কিনা সরকার’ স্লোগান দিয়ে তাঁতীবাজার মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শাঁখারী বাজার ও রায়সাহেব বাজার হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কিছুক্ষণ সড়ক অবরোধ করে বাংলাবাজার মোড়ের বাহাদুর শাহ পার্কে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।
ব্যারিকেড ভাঙার মার্চ: বিকেলে আন্দোলনকারীরা শিক্ষা ভবন ও জিরো পয়েন্টের সামনে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনের পাশে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে ক্যাম্প করে। এরপর প্রতিনিধিদের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি বঙ্কভবনে পৌঁছায়। দাঙ্গাবাজরা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং 24 ঘন্টার মধ্যে পুলিশি অভিযান থেকে সরে আসার আল্টিমেটাম জারি করে। এ কর্মসূচির পাশাপাশি গতকাল সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মধ্য ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা সোমবার এ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ঘোষণা করেননি। কিন্তু আজ বিকেলে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষে আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জানান, ‘বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন’ এই শ্লোগানে গতকাল দুপুরে রাজধানী ঢাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ‘গণপদৈত্র’ চালু করা হয়। পদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। “গণপদৈত্র” বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, সুপ্রিম কোর্ট ও সচিবালয় হয়ে গোলেস্তানের গ্রাউন্ড জিরোতে পৌঁছে। শিক্ষার্থীরা গ্রাউন্ড জিরোতে এসে বিক্ষোভে সড়ক অবরোধ করে।
এর আগে গুণপদযাত্রা শিক্ষা ভবনে পৌঁছালে পুলিশ তাকে বাধা দেয়। ছাত্ররা ব্যারিকেড ভেঙ্গে এগিয়ে গেলেও গ্রাউন্ড জিরোতে পুলিশ আবারও বাধা দেয়। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর বিক্ষোভকারীরা আবারও পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে বায়তুল মাকারম মসজিদের দক্ষিণ গেট থেকে বঙ্গবন্ধু সড়কে চলে যায়। তবে তারা বঙ্গবন্ধু চত্বরে ট্রাফিক থানার বাইরে গেলে নিরাপত্তার স্বার্থে আবারও বঙ্গবন্ধু চত্বরে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশ বর্তমানে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস এবং বেয়নেট দিয়ে সজ্জিত রয়েছে। শিক্ষার্থীরাও নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পুলিশের সহযোগিতায় বঙ্গভবনে যান। বঙ্গবেহবানে গিয়ে স্মারকলিপি হস্তান্তরের পর প্রতিনিধি দল ফিরে না আসা পর্যন্ত দাঙ্গাকারীরা গোলেস্তানের বাজার পটার মোড় অবরোধ করে। প্রতিনিধিদল বঙ্গভবন থেকে ফিরে আসার পর ছাত্ররা গোলেস্তান ত্যাগ করে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কারী: জনাব নাহিদ ইসলাম, জনাব সুরজিত আলম, জনাব আসিফ মাহমুদ, মেহিন সরকার, মেরিল্যান্ড, আব্দুল কাদির, আব্দুল হানান মাসউদ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক জনাব আরিফ সোহেল, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কারী জনাব আশিক আহমদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কারী জনাব মেহরুনসা নিদ্রা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম সমন্বয়কারী জনাব হাসিব আল ইসলাম ও রশিদুল ইসলাম রিফাত, সোমা আক্তার, মো. বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক। প্রেসিডেন্সির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদেল চৌধুরী বঙ্গ বাবানে এই নোটটি গ্রহণ করেন। রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে যে 2018 সালের সার্কুলার বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার প্রতিফলন করেনি। শিক্ষার্থীরা সরকারী সেক্টরে সকল গ্রেডের জন্য কোটার যৌক্তিক সংশোধন চেয়েছিল। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার, মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান এবং কার্যকরী সরকার গঠন নিশ্চিত করতে মেধাভিত্তিক নিয়োগের বিকল্প নেই।
জবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ, শিক্ষকদের ইতিহাদ : জবি প্রতিনিধি জানান: সরকারি কর্মচারীদের কোটা সংস্কারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সংহতির নিদর্শন হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরাও এই সমাবেশে অংশ নেন।
রাজশাহীতে ৯ কিলোমিটার পদযাত্রা : রাবির প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে যৌক্তিক কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজশাহীতে বিশাল মিছিলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
ইবি স্টুডেন্টস মার্চ: ইবি কর্মকর্তারা বলেছেন: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সংসদে ব্যতিক্রমী অধিবেশন ডেকে কোটা যৌক্তিক পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষা উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
গাইবান্ধায় হামলা: গাইবান্ধায় কোটা সংস্কার সমাবেশে ছাত্রলীগের ওপর হামলার অভিযোগ করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে গাইবেন্দা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে এ ঘটনা ঘটে।
কুমিল্লায় কর্মসূচী পরিবর্তন: কুমিল্লার একজন বলেছেন, গতকাল একই স্থানে কুমিল্লা মহানগর ছাত্র শান্তি সমাবেশের ঘোষণায় ঘোষিত স্থান পরিবর্তন করেছে কোটা সংস্কারপন্থীরা। তারা কুমিল্লা পুলিশ চৌরাস্তায় কর্মসূচি পালন করেন।
দিনাজপুরে স্মারকলিপি: দিনাজপুর কর্মকর্তা জানান, দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপির অনুলিপি হস্তান্তর করেছেন।
ময়মনসিংহের বাকরিবিতে গণপদযাত্রা: ময়মনসিংহের মুখপাত্র জানান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকরিবি) শিক্ষার্থীরা গণপদযাত্রা ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছে।
নাটোরে পদযাত্রা ও সমাবেশ: নাটোরের মুখপাত্র জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নাটোরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। সকালে তারা নাটোর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মাদ্রাসা মোড় প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাব চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
ঝিনাইদহে পদযাত্রা ও সমাবেশ: ঝিনাইদহে জানান, গতকাল সকাল ১১টায় ঝিনাইদহের শিক্ষার্থীরা উজির আলী স্কুল প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে মিছিল শুরু করে। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পায়রা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশ হয়। পরে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কাছে তাদের দাবিসহ স্মারকলিপি দেয়।
রংপুরে পদযাত্রা ও স্মারকলিপি : রংপুরের পৃথক সংবাদদাতা জানান, দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের আধুনিক প্রাণকেন্দ্র বটতলায় গিয়ে শেষ হয়। এতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। পরে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন।
পটুয়াখালীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাভি পুরভি নোট: পটুখালীর প্রতিনিধিরা জানান, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবি পুরভি) শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক বর্ণাঢ্য পদযাত্রা ও নোটিশের আয়োজন করে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাটোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত জনসভা শেষে তারা পাটোয়াখালী জেলা প্রশাসক যাদব সরকারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বগুড়ায় বিক্ষোভ : বগুড়ার এক প্রতিবেদক জানান, বগুড়ায় বিক্ষোভ ও ছাত্র সমাবেশ হয়েছে। সকালে বগুড়ার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শহরের সাতমাতায় সমাবেশ করে। আজিজুল হক স্টেট ইউনিভার্সিটি, শাহ সুলতান স্টেট ইউনিভার্সিটি, মুজিবুর রহমান মহিলা স্টেট ইউনিভার্সিটি, বগুড়া ইউনিভার্সিটি ও বগুড়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা এই পদযাত্রায় অংশ নেয়। শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল বের করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর জেলা প্রশাসক সচিবালয়ে একটি যোগাযোগ হস্তান্তর করেন।