Home বাংলাদেশ ভৈরবে ডুবে যাওয়া ট্রলার সোহেল রানার পরিবারের কেউ নেই।

ভৈরবে ডুবে যাওয়া ট্রলার সোহেল রানার পরিবারের কেউ নেই।

0
0

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে একে অপরের পাশে দাফন করা হয়েছে।

সোমবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কুমিল্লা দ্বীদার উপজেলার ফাতাবাদ ইউনিয়নের ফতাবাদ পূর্ব গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দম্পতিসহ শিশু দুটিকে দাফন করা হয়। সকালে সোহেল ও তার ছেলে রসুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

শনিবার বিকেলে সোহেলের স্ত্রী মেছমি আক্তার ও তার মেয়ে মাহমুদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সাহল জেলা কামিলা ডোভিডওয়ার গ্রাম ফতেহ আবাদ (অবসরপ্রাপ্ত) সামরিক কর্মী, এম.ডি. আব্দুল আলীমের ছেলে মো.

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ভৈরবের মেঘনা নদীতে বালির দেয়ালে ধাক্কা লেগে একটি ট্রলার ডুবে যায়। এর মধ্যে মারা গেছেন ৯ জন। এগারো জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

সোহেলের সর্বশেষ পোস্টিং ছিল কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব ট্রাফিক থানায়। ভৈরওয়া ট্রাফিক থানার এএসআই ইব্রাহিম বলেন, দুর্ঘটনায় পরিবারের সবাই মারা গেছে শুনে আমরা হতবাক। যোহর ভৈরব মহাসড়কে থানার সামনে সোহেল ও তার দুই সন্তানের জানাযা শেষে স্বজনরা লাশ দাফন করতে গ্রাম পরিষদে যান।

এদিকে সোমবার বিকেলে সোহেলের বাড়িতে সবাইকে লাশের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। তিনজনের মরদেহ বাড়িতে আনার খবর পেয়ে শত শত স্থানীয় বাসিন্দা জড়ো হন। সন্ধ্যার কিছু আগে সোহেল ও তার দুই সন্তানের মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে টাউন হলে নিয়ে যাওয়া হয়। বাদ মাগরিব জানাযা শেষে দুই শিশুকে তাদের পিতা-মাতার কবরের পাশে দাফন করা হয়। এর আগে রোববার একই স্থানে মৌসুমী আক্তারের মরদেহ দাফন করা হয়। জানাজার আগে ছেলে ও নাতির কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সোহেলের বাবা।

সোহেলের বাবা আব্দুল আলিম জানান, সময় পেলেই সোহেল মোবাইল ফোনে ভিডিও কলের মাধ্যমে সন্তানদের দেখাতেন। তিনি জানান, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বাড়িতেই এই ছুটি উদযাপন করবেন তিনি।

তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকালে সোহেলের সঙ্গেও মোবাইল ফোনে কথা হচ্ছিল। ডিউটির সময় পেলেই প্রতিদিন আমাদের ডাকতেন। সোহেলের ফোন আর কল রিসিভ করছে না।

পরিবারের সদস্যরা জানান, তিন ভাইবোনের মধ্যে সোহেল দ্বিতীয়। আরেক ছোট ভাই থাকে সিঙ্গাপুরে। সোহেল ২০১১ সালে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ পান। বিদেশে থাকা তার ছোট ভাইয়ের কাজের সমস্যা এবং করোনার পর শুরু হওয়া আর্থিক সংকটের কারণে পরিবারের একমাত্র ভরসা ছিলেন সোহেল। প্রতি মাসে সে তার বাবা-মাকে সংসারের খরচ মেটাতে টাকা পাঠাত। তার মৃত্যুর সাথে সাথে এটিও বন্ধ হয়ে যায়।

গত শুক্রবার বিকেলে স্ত্রী, দুই সন্তান ও ভাতিজি মরিয়মকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোনারচর দ্বীপ গ্রামে যান সোহেল। ফেরার পথে নৌকায় থাকা অন্য পরিবারগুলো নাবিককে একটি ছবি তুলতে বললে নাবিক তার হাত ছেড়ে দিয়ে ছবি তোলেন। এ সময় নৌকাটি কিছুটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এরপর বিপরীত দিক থেকে আসা বালির বাল্কহেডের সঙ্গে ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে নৌকাটি উল্টে যায়। এই মুহূর্তে মারিয়া বেঁচে গেলেও বাকি চারজন ডুবে যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here