গত দুই দিনে সোনামগঞ্জে ভারী বর্ষণ না হলেও একই সঙ্গে পাহাড়ের ঢাল কমে যাওয়ায় নদী ও অববাহিকার পানির স্তর নেমে এসেছে। তবে হাওরে পানি ক্রমেই কমছে। এখনো অনেক বাড়িতে ও রাস্তায় পানি জমে আছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ কমে না।
সোনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সানামগঞ্জ শহরের শুরগার পয়েন্টে পানির স্তর ছিল ৭ দশমিক ৬৮ মিটার, বন্যা সীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচে। গত ২৪ ঘণ্টায় সোনামগঞ্জে ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভারতের উজানে চেরাপুঞ্জিতে এই সময়ের মধ্যে ৪৪ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় উভয় এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
সোনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এখনো যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তবে পানি কমে যাওয়ায় সোনামগঞ্জ-বিশ্বনবলপুর ও সোনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। তবে তাহিরপুর, দোয়ারা বাজার, বিশ্ববলপুর ও সদরের নিচু এলাকার বাড়িঘর ও রাস্তায় এখনও পানি জমে আছে। মানুষ নৌকায় যাতায়াত করে। ভোগান্তি বৃদ্ধি।
সদর জেলার হাভারপুর এলাকার নিরপুর কান্ধাটি গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ আলী (৪৬) জানান, ওই এলাকার কিছু বাড়িতে এখনও পানি রয়েছে। রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
একই গ্রামের শাহিদেহ বেগম (৫০ বছর বয়সী) বলেন, “আমি এক সপ্তাহের জন্য ইশকোলে এসেছি। ঢেউ আমার ঘরের বেড়া ও মেঝে ধ্বংস করে দিয়েছে। খাওয়ার সুযোগ নেই। হাভারপুরে তিনি বলেন, “যখন বৃষ্টি হয়, গত দুই দিনে তেমন বৃষ্টি হয়নি, তাই পানির অভাব হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে বৃষ্টির কারণে পানির স্তর নেমে গেছে। সে আবার জেগে উঠেছে।
সদর উপজেলা পরিষদের সহ-সভাপতি নিগার সুলতানা জানান, হাভারের পানি ধীরে ধীরে নামছে এবং স্থবির হয়ে পড়ছে। গত রাতে পানির স্তর কিছুটা বেড়েছে। তারা যত বেশি সময় পানিতে থাকে, ততই তাদের কষ্ট হয়। মানুষ আর কতদিন ধরে রাখতে পারে? শুরু হয়েছে ঈদের দিন। আমার এখনও এটি আছে
দোয়ারাবাজার উপজেলা মান্নারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা আজিজ বলেন, এবার পানি কমতে কমছে। আগে বন্যার পানি দ্রুত কমে যেত। এটা এখন হচ্ছে না।
সুনামগঞ্জে ১৬ জুন থেকে বন্যা দেখা দিয়েছে। মাঝে মাঝে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়। এ অঞ্চলের ১৮ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। 8 মিলিয়ন মানুষ ভিজে গেছে। অনেক বাড়ি-ঘর ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। ব্যক্তিগত বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে ২৫ হাজার পরিবার। ২৩শে জুনের পর নদীগুলোতে পানি কমতে থাকে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে মানুষ বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু মানুষ বিশ্রাম নেওয়ার আগেই বন্যা পরিস্থিতির আবারো অবনতি হয়।
সুনামগঞ্জ শহরের প্রধান প্রকৌশলী মো. মামুন খোয়াদ্দার বলেন, উজান পাহাড়ে সমস্যা বেশি। জোয়ার নেমে গেলে পানি বাড়ে। গত রাতে তেমন বৃষ্টি হয়নি এবং কম গ্রেডিয়েন্ট আপস্ট্রিম ছিল। ফলে সুরমা ও হাওর নদীর পানি কমেছে। তবে ভারী বৃষ্টির সময় আবারও পানি বাড়তে পারে।