শুক্রবার ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। ভোটের ফলাফল অনুযায়ী এগিয়ে রয়েছেন কট্টরপন্থী প্রার্থী সৈয়দ জলিলী। ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয় শনিবার সকালে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এ ঘোষণা দেয়।
জানা যায়, জালিলি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ। নির্বাচনে মূল লড়াই হবে জালিলি এবং একমাত্র সংস্কারপন্থী প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ানের মধ্যে।
রানা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা মোহসেন এসলামি আজ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন যে এখন পর্যন্ত ১৩ মিলিয়নেরও বেশি ভোট গণনা করা হয়েছে। এর মধ্যে জলিলী পেয়েছেন ৪২ হাজার ও ৬০ হাজার ভোট। সংস্কারবাদী প্রতিদ্বন্দ্বী এবং এমপি মাসুদ পেজেশকিয়ান প্রায় ৪.২৪ মিলিয়ন ভোট পেয়েছেন।
কট্টরপন্থী প্রার্থী ও সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ বাগের গালিবাফ ৮০ হাজার ভোটের মধ্যে পেয়েছেন ১৩ হাজার। আরেক কট্টরপন্থী মোস্তফা পৌরমোহাম্মাদি পেয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি ভোট।
খামেনির নেতৃত্বাধীন কট্টরপন্থী সরকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ছয়জন প্রার্থীকে মনোনীত করেছে। উভয় কট্টরপন্থী পরে তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে চারজন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে তিনটি কট্টরপন্থী এবং একটি তুলনামূলকভাবে সংস্কারমুখী।
এবারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল প্রায় ৪০ শতাংশ, নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তি রয়টার্সকে জানিয়েছেন। ২০২১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪৮ শতাংশ। আর গত মার্চে সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ৪১ শতাংশ।
নির্বাচনে প্রার্থীদের কেউ ন্যূনতম ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম রাউন্ডে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানের জন্য দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে। প্রথম ধাপের ফলাফল ঘোষণার পর প্রথম শুক্রবার দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইরানের তাসনিম বার্তা সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
অন্যদিকে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও ইরানের মিত্র হামাস এবং লেবানিজ হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক উত্তেজনা রয়েছে। এছাড়া ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমাদের চাপ বেড়েছে। এর প্রেক্ষাপটে গতকাল ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
তবে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলে ইরানের পররাষ্ট্রনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ইরানের প্রেসিডেন্টের ভূমিকা আন্তর্জাতিক মঞ্চে মনোযোগ আকর্ষণ করলেও, দেশের প্রকৃত ক্ষমতা দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার হাতে।
নিয়ম অনুযায়ী ইরান আগামী জুনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেবে। অর্থাৎ বর্তমান প্রেসিডেন্টের চার বছরের মেয়াদ শেষে ভোট হয়েছে। তবে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ১৯ মে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গেলে পদটি শূন্য হয়। তাই আগাম নির্বাচনের বিকল্প নেই। সংবিধান অনুযায়ী ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন হতে হবে।