আরাকান আর্মি বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু দখলের জন্য তাদের আক্রমণে সামরিক সমর্থক বাহিনীর কঠোর প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি, মর্টার ও বোমা হামলা হয়।
গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আরাকান আর্মি অপারেশন মন্ডো শুরু করে এবং সামরিক সরকারি বাহিনী পাল্টা আক্রমণ চালায়। মর্টার শেল এবং বোমার বিস্ফোরণে বেসামরিক ব্যক্তিরা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ অবস্থায় রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করছেন অনেকে।
এদিকে রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন সীমান্তের ওপারের বাসিন্দারা। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের টেকনাফের বেশ কয়েকটি সীমান্ত গ্রামে মর্টার শেল ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। গতকাল ও বুধবার দিনের বেলায় মাঝে মাঝে এই শব্দ শোনা যায়।
মংডো শহরের বাসিন্দা আব্দুল আমিন করো কান্তাকে বলেন, যদিও আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখল করেছে, তবে তারা দীর্ঘদিন ধরে মংডো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। আরাকান আর্মি জামতিরা পাড়া, কানার পাড়া এবং ইতিরাপাড়ার মতো এলাকাগুলি নিয়ন্ত্রণ করে, যা মান্ডু শহরের খুব কাছে। সেখান থেকে তারা মংডু আক্রমণের চেষ্টা করে। যাইহোক, সামরিক শাসন সমর্থিত বাহিনী প্রতিরোধ করার জন্য তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিল।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার রাতে দুই বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মংডুতে বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষ নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এ অবস্থায় অনেকেই বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
মংডুর মন্নিপাড়ার বাসিন্দা আবুল বাশার জানান, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে রাখাইনে সংঘাতের কারণে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন এলাকা থেকে পালিয়ে নাফ নদী সীমান্তে অবস্থান করছে। তারা বাংলাদেশে পালানোর পথ খুঁজছে।
কক্সবাজারের টেকনাফ গ্রামের জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা আবুল আলী বলেন, গভীর রাতে একের পর এক মর্টার শেল ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দে আমাদের ঘরবাড়িও কেঁপে ওঠে।
ছোট বাচ্চারা ভয়ে কাঁদছে।
টেকনাফ ইউনিয়নের বাসিন্দা সদর শাহ আলম বিপ্লব জানান, এমন মর্টার শেল ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দ তিনি আগে কখনো শোনেননি। বাসিন্দারা কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
রাখাইনে সংঘাতময় পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে টেকনাফ থেকে কিছু স্থানীয় চোরাকারবারি নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর দিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাচারের পরিকল্পনা করছে।